হাইব্রিড কম্পিউটার কি ? হাইব্রিড কম্পিউটার এর বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ

আকার, আকৃতি ও ডেটা পরিচালনার ক্ষমতার ভিত্তিতে কম্পিউটার কে তিন ভাগে ভাগ করা হয় এনালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার এবং হাইব্রিড কম্পিউটার।

আমরা এর আগের আর্টিকেলে এনালগ কম্পিউটার কি এবং ডিজিটাল কম্পিউটার কি এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

তো আজকের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে হাইব্রিড কম্পিউটার। আপনি যদি হাইব্রিড কম্পিউটার সম্পর্কে তেমন কিছু না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

হাইব্রিড কম্পিউটার কি ? হাইব্রিড কম্পিউটার এর বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ
Hybrid computer in Bengali

তো আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করব হাইব্রিড কম্পিউটার কী (hybrid computer in bangla)|হাইব্রিড কম্পিউটার এর বৈশিষ্ট্য|হাইব্রিড কম্পিউটার কত প্রকার|হাইব্রিড কম্পিউটারের উদাহরণ কি ইত্যাদি বিষয়। 

চলুন তাহলে বেশি কথা না বলে হাইব্রিড কম্পিউটার  কাকে বলে (hybrid computer meaning in Bengali) এ বিষয়টি জেনে নিই।

হাইব্রিড কম্পিউটার কি | What is hybrid computer in Bengali

হাইব্রিড কমপিউটার হলো এমন এক ধরনের কম্পিউটার যাতে এনালগ এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের সমস্ত রকম বৈশিষ্ট্য থাকে। এটি এনালগ সংকেত গ্রহণ করে এবং প্রক্রিয়াকরণের আগে ডিজিটাল আকারের রূপান্তরিত করে অর্থাৎ এনালগ পদ্ধতিতে তথ্য বা সংকেত গ্রহণ করে এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করে ।

হাইব্রিড কম্পিউটার এ অ্যানালগ কম্পিউটারের কাজের গতি এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের নির্ভুলতা ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে বলে এই ধরনের কমপিউটার খুবই ফাস্ট এবং নির্ভুল প্রকৃতির হয়।

 


 

এই কম্পিউটারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের জটিল গননা করা। হাইব্রিড কম্পিউটার নির্দিষ্ট কাদের জন্য ব্যবহার করা হয়, তবে ব্যক্তিগত কজের জন্য এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় না। বিমান, জাহাজ, সাবমেরিন, হসপিটাল ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য কম্পিউটারের তুলনায় এই কম্পিউটারের দামও বেশি।

হাইব্রিড কম্পিউটার কাকে বলে | What is hybrid computer in Bangla 

যে কম্পিউটারে অ্যানালগ এবং হাইব্রিড কম্পিউটারের সমস্ত বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় তাকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলে ।এই কম্পিউটার এনালগ এবং হাইব্রিড কম্পিউটারের সমন্বয়ে তৈরি।

হাইব্রিড কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন ?

Hycom 250 হলো বিশ্বের প্রথম হাইব্রিড কমপিউটার, এটি 1961 সালে Packard Bell তৈরি করেছিলেন। তারপর 1963 সালে বিশ্বের দ্বিতীয় হাইব্রিড কম্পিউটার তৈরি করা হয় যেটির নাম ছিলো HYDAC 2400

তারপর ধীরে ধীরে আরো উন্নত হাইব্রিড কমপিউটার তৈরি হতে থাকে বিভিন্ন রকম জটিল কার্য সম্পূর্ণ করার জন্য।

হাইব্রিড কম্পিউটারের উদাহরণ 

হাইব্রিড কম্পিউটারের কিছু উদাহরণ হলো 

   • Petrol pump

   • Scientific laboratory

   • ATM machine

   • CT scan machine

   • ICU (Hospital এ ব্যবহার হয়)

   • Gas pump station 

   • Monitoring Machine ইত্যাদি।

হাইব্রিড কম্পিউটার কত প্রকার |  types of hybrid computer 

হাইব্রিড কম্পিউটারের প্রকারভেদ অর্থাৎ hybrid computer তিন ধরনের হয়।

   ১. Large Electronic Hybrid Computers

   ২. General Purpose Hybrid Computers

   ৩. Special-Purpose Hybrid Computers

শুনুন তাহলে এর প্রত্যেকটি ভাগ নিচে বিস্তারিত আলোচনা করি।

১. Large Electronic Hybrid Computers : 

 এই ধরণের হাইব্রিড কমপিউটার গুলি 1960 থেকে 1980 এর দশকের মধ্যে আবিষ্কার হয়েছিল। জটিল ডিফারেনশিয়াল সমীকরণ সমাধান করার জন্য এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। তবে এই কম্পিউটারের ব্যবহার অনেকটাই কমে গেছে।

২. General Purpose Hybrid Computers : 

এই কম্পিউটারের সাহায্যে দ্রুত গতিতে এবং নির্ভলতার  সাথে ডেটা ক্যালকুলেট করা যায়, এছাড়া হাই স্পিডের সাথে অনেকগুলো কাজ করা যায়। এই কম্পিউটার গুলি অন্যান্য কম্পিউটার থেকে  flexible এবং user friendly হয়।

৩. Special-Purpose Hybrid Computers : 

এই ধরনের কমপিউটার গুলি হাসপাতাল, ফায়ার স্টেশন, ফোরেন্সিক ল্যাব ইত্যাদি জায়গায় বেশি ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের কম্পিউটার নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার সমাধানের জন্য প্রোগ্রাম এবং Subsystem Simulator, Function Controller, Results Analyzer ইত্যাদি এম্বেড করা থাকে।

 


 

হাইব্রিড কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য 

• hybrid computer অ্যানালগ এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্নয় এ তৈরি।

• এই কম্পিউটারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দ্রুত গতিতে এবং নির্ভলতার সাথে ডেটা গননা করতে পারে।

• এই কম্পিউটারের দ্বারা এনালগ পদ্ধতিতে তথ্য গ্রহণ করে সংখ্যার দ্বারা ফলাফল প্রকাশ করে।

• এই কম্পিউটার digital এবং analogue কম্পিউটারের প্রচুর বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে।

• শুধুমাত্র বিশেষ ধরনের কাজের জন্য এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

হাইব্রিড কম্পিউটার এর ব্যবহার 

হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করে অনেকগুলো কাজ করা হয় যেমন

• সামরিক সুরক্ষা, এয়ারলাইন্স এবং জাহাজ এ এ ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

• হসপিটালের বিভিন্ন কাজ যেমন আইসিইউ (icu), সিটি স্ক্যান, আলট্রাসাউন্ড মেশিন ইত্যাদিতে Hybrid computer ব্যবহার করা হয়।

• ATM মেশিনে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

• সিমেন্ট কারখানা , gas pump ইত্যাদি জায়গায় এই ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

• বৈজ্ঞানিক গবেষণা ক্ষেত্রে হাইব্রিড কমপিউটার ব্যবহার করা হয়।

• সেল ফোনে সিগনাল পরিবর্তন করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।।

 


 

হাইব্রিড কম্পিউটারের সুবিধা

এই কম্পিউটার ব্যবহারে অনেক সুবিধা রয়েছে যেমন

• এই কম্পিউটারের স্পিড অনেক বেশি এবং নির্ভুল ফলাফল দেই।

• analog এবং digital computer এর থেকে এই কম্পিউটারের গুরুত্ব অনেক বেশি।

• এই কমপিউটার অনলাইন ডেটা প্রসেসিং করতে সক্ষম।

• সঠিক সময়ে বড় বড় সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম।

হাইব্রিড কম্পিউটারের অসুবিধা 

এই কম্পিউটার ব্যবহারের বেশ অসুবিধা রয়েছে যেমন

• সফটওয়্যার, হার্ডওয়ার ইন্সটল করা বেশ জটিল।

• এই কম্পিউটার বেস ব্যয়বহুল।

• হাইব্রিড কম্পিউটার চালানোর জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়।

আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে হাইব্রিড কম্পিউটার বলতে কি বুঝায় |হাইব্রিড কম্পিউটারের কাজ কি হাইব্রিড কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য কি ইত্যাদি বিষয় জানতে পারলেন।

Hybrid computer কি এই নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি কেমন লাগলো অবশ্যই নিচে থাকা কমেন্ট বক্সে আপনাদের মতামত জানাতে পারেন ধন্যবাদ।

Leave a Comment